সম্মহিত সোনালু | The Golden Shower
গ্রীষ্মে ঝাড়বাতির মতো ঝুলে থাকা বড় বড় থোকায় হলুদ-সোনালি রঙের এ ফুলগুলো চারপাশ আলোকিত করে রাখে। এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি তার নামের বাহার – সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠি ইত্যাদি। শীতকালে সব পাতা ঝরার পর বসন্তে একেবারেই মৃতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে গাছটি। গ্রীষ্মের শুরুতে দু-একটি কচিপাতার সঙ্গে ফুল ফুটতে শুরু করে। হলুদ সোনালি রঙের অসংখ্য ফুল সারা গাছজুড়ে ঝাড় লণ্ঠনের মতো ঝুলতে থাকে।
দীর্ঘ মঞ্জুরিদণ্ডে ঝুলে থাকা ফুলগুলোর পাপড়ির সংখ্যা পাঁচটি। সবুজ রঙের একমাত্র গর্ভকেশরটি কাস্তের মতো বাঁকানো। এ গাছের ফল বেশ লম্বা, লাঠির মতো গোল, তাছাড়া ফল, ফুল ও পাতা বানরের প্রিয় খাবার। এজন্য এ ফুলের আরেক নাম বান্দরলাঠি। ফলের শাঁস বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে কাজে লাগে। ফলের বিভিন্ন অংশ বাত, বমি ও রক্তস্রাব প্রতিরোধে উপকারী। বাকল, রঙ ও ট্যানিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। এ গাছের কাঠ জ্বালানি ছাড়াও অন্যান্য কাজে লাগে।
পাশাপাশি এক সারিতে দু-তিনটি গাছে যদি ফুল ফোটে তাহলে সে দৃশ্য বেশ উপভোগ্য হয়ে ওঠে। শুধু গ্রাম নয়, শহরেও এখন সোনালু ফুল দেখা যায়। ফুলের এমন শোভার কারণেই এ ফুলের ইংরেজি নাম গোল্ডেন শাওয়ার (Golden Shower)। ঢাকায় এ গাছের সংখ্যা খুব বেশি নয়। জানামতে, শেরেবাংলা নগরে জাতীয় সংসদ ভবনের মাঝখানের রাস্তায় যে একসারি গাছ দেখা যায় তা-ই ঢাকা শহরে সোনালুর সবচেয়ে বড় সমারোহ। এ ছাড়া রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেন, ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রাঙ্গণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সোনালুর দেখা মেলে।
বীজ সহজেই অঙ্কুরিত হয়, যদিও বৃদ্ধি মন্থর। সোনালুর আদিবাস পূর্ব এশিয়ায়। বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাশিয়া ফিস্টুলা (Cassia Fistula)। ক্যাশিয়া গ্রিক নাম আর ফিস্টুলা অর্থ বাঁশি। ফলের আকৃতির জন্য এমন নামকরণ।
Click here to read more in English | Thank you!